হাজীগঞ্জে হিন্দু-মুসলমান সমর্থিত দলের ফুটবল খেলা, গোল নিয়ে দফায় দফায় মারামারি, আহত ৬

খালেকুজ্জামান শামীম

হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯ নং গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড হরিপুর গ্রামে পূর্ব হরিপুর একতা ক্লাব (হিন্দু) বনাম শ্যামলী গুচ্ছগ্রাম একাদশের (মুসলমান) সাথে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার বিকালে খেলার অতিরিক্ত সময়ে শ্যমলী গুচ্ছগ্রাম একাদশের একটি গোল মেনে নিতে পারেনি পূর্ব হরিপুর একতা ক্লাব। এ নিয়ে খেলার মাঠে হট্রগোল হয়। ওই হট্রগোলকে কেন্দ্র করে গন্ধর্ব্যপুর বাজারে সন্ধ্যায় অপু সাহা হামলা চালিয়ে সাগরের মাথায় আঘাত করে।

খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যমলী গুচ্ছগ্রামের লোকজন পূর্ব হরিপুর গ্রামে ঢুকে পড়ে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মারামারি হয়। এতে শ্যমলী গুচ্ছগ্রামের চারজন ও পূর্ব হরিপুর গ্রামের দুইজন আহত হয়।

আহতরা হলো শ্যামলী গুচ্ছগ্রামের সাগর ,আরিফ, সেলিম ও সোহেল। তাদের মধ্যে সাগরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। বাকী তিনজন শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যদিকে পূর্ব হরিপুর গ্রামের আহত কালা চরণ দাস (৫৩)কে ঢাকায় রেফার করা হয়। আহত আরেকজন রাহুল দাস (১৯) হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।

হিন্দু ও মুসলমান দলে ভাগ হয়ে খেলাটাই সঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি

ঘটনার বিবরণী জানতে শনিবার সকালে ওইগ্রামে সরজমিনে গিয়ে কথা হয় উভয়পক্ষের সমর্থকদের সাথে। তারা সবাই হিন্দু ও মুসলমান দলে ভাগ হয়ে খেলাটাই সঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তবে জানা গেছে, এরপূর্বে চারবার একই দলে ভাগ হয়ে ফুটবল খেলেছে। এদিকে পূর্ব হরিপুরবাসীর দাবী করছেন, গুচ্ছগ্রামের তারা দলবল নিয়ে তাদের মন্দির ও বাড়ী ঘর ভাংচুর করেন।

ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ ও হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশীদসহ পুলিশের একাধিক ফোর্স ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা দীন ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। কোন নিরীহ ব্যক্তিবর্গ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে প্রশাসন লক্ষ্য রাখতে হবে।

ইউপি সদস্য ফিরোজ আহম্মেদ হিরা বলেন, মন্দিরের সামনের বেড়া ভাংচুর হয়। আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ ও হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশীদ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এভাবে ধর্মভিত্তিক দলে ভাগ হয়ে তাদের খেলাটা ঠিক হয়নি। উভয়পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।