ভ্যানচালককে মারধর, মৃত ভেবে ধানক্ষেতে ফেলে রাখলো মাদকসেবীরা

ফরিদগঞ্জ উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে কথা বলায় মুরাদ হোসেন (২২) নামের এক যুবককে রাতের আঁধারে মারধর করে ধান ক্ষেতের কাঁদা পানিতে পেলে রাখলো মাদকসেবীরা। কিন্তু কথায় আছে রাখে আল্লা, মারে কে।
তেমনটাই ঘটলো আহত মুরাদের জীবনে। তাকে রাতের আঁধারে বেধরক মারধর করে ধান ক্ষেতের কাঁদা পানিতে ফেলে রাখলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলে সে। বর্তমানে আহত মুরাদ হোসেন চাঁদপুর  সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত ৬ অক্টোবর বুধবার রাত সাড়ে আটটায় ঐ উপজেলার ১২ নং চরদুখিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডস্থ সন্তোষপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত মুরাদ হোসেন ওই গ্রামের পাতিল বেপারী বাড়ির আজিদ বেপারীর ছেলে।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে। আহত মুরাদ হোসেন ও তার মাতা আকলিমা বেগম জানান, বুধবার রাত ৮টার দিকে মুরাদ হোসেন ভ্যান গাড়ি চালিয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় একই গ্রামের মমিন নামে এক যুবক তার ভ্যানগাড়িতে করে মালামাল নিয়ে যাওয়ার কথা বলে একটি ধানক্ষেতের পাশে নিয়ে যায়।
সেখানে পূর্ব থেকে পরিকল্পিত ভাবে উৎপেতে থাকা একই গ্রামের আমির হোসেন বেপারীর ছেলে সাইফুল ইসলাম বাবু, নান্নু বেপারী, লিটন বেপারী, আব্বাস বেপারী, ইমরান ও তারেক মিলে মুরাদ হোসেন কিছু বুঝে উঠার আগেই তাঁকে এলোপাতাড়িভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করতে থাকে।

একপর্যায়ে তারা তাকে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা চালায় বলে তাদের অভিযোগ।

তাদের বেধড়ক মারধরে ভ্যানচালক মুরাদ হোসেন গুরুতর আহত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে মৃত ভেবে অভিযুক্তরা ওই গ্রামের পাশে থাকা একটি ধানক্ষেতে কাদা পানিতে ফেলে চলে যায়। পরে স্বজনরা খবর পেয়ে তাকে সেখান থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে চিকিৎসার জন্য ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার অবস্থা গুরুতর দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
ওই এলাকার বিল্লাল গাজী জানান, ঘটনার দিন রাতে যেখানে ঘটনা আমি সেখানে অনেক চিৎকার শুনতে পেয়ে বাবুর ভাতিজাকে জিজ্ঞেস করলে সে আমাকে জানায়, বাবু কাকা মুরাদকে মারধর করছে। তার কথামতো আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ধানক্ষেতে কিছু একটা পড়ে আছে। পরে মুরাদের বাবা-মাকে খবর দিলে তারা তাকে উদ্ধার করে।
একই এলাকার ওসমান বেপারী জানান, মুরাদকে তারা মারধর করে ধানক্ষেতে মেরে ফেলে রাখার খবর পেয়ে আমি তাকে সেখান থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করি। আমি কেন তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেছি এজন্য অভিযুক্তরা আমার বাড়ি ঘরে এসে আমাকে মারার জন্য বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ শরীফ জানান, ঘটনার সময় আমি বাজারে ছিলাম। আমার ছেলেসহ অন্যান্যরা  তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেছে। মুরাদকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখে আমি তাদেরকে বলেছি আগে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম বাবুদের সাথে কথা বলতে চাইলে তাদের কাউকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান ঘটনার পর থেকেই তারা প্রত্যেকে পলাতক রয়েছে।