‘বুলবুল’ এর প্রভাবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি চাঁদপুরে

দিগন্ত রিপোর্ট

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও শক্তিশালী হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাঁদপুরে ১নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ইতোমধ্যে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে। যা সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়তে পারে।

এদিকে ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাব পড়েছে চাঁদপুরে। শুক্রবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। ১১টার পর থেকে শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। জেলার মেঘনা, ডাকাতিয়া আর ধনগোদা নদীর পানিও থমথমে অবস্থায় আছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান চাঁদপুর জেলা প্রশাসক। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের প্রত্যেকের প্রস্তুত থাকতে হবে। যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তা ছুটিতে আছেন, তাদের অভিলম্বে স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদিতে হবে। তিনি বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় ৫৮টি মেডিকেল টিম, স্থানীয় স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাতো আছেনই। সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং বলগেট, ড্রেজার ইত্যাদি ছোট নৌযানগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। বিভিন্ন চরাঞ্চলে মাইকিং করা হচ্ছে বলে জানান প্রশাসক। জেলা প্রশাসক বলেন, জরুরি অবস্থা মোকাবেলা করার জন্য ১৮৪ মেট্রিক টন চাল, নগদ এক লাখ ৭০ হাজার টাকা, ৭৩৬ ব্যান্ডেল টিন এবং প্রতি ব্যান্ডেলের জন্য ৩ হাজার টাকা করে মজুদ রাখা হয়েছে।

চাঁদপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাগেছে, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবের কারণে চাঁদপুর নদীবন্দরকে ১নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিসের সূত্র অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বাড়ার পর থেকেই আমরা চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখছি। জরুরি প্রয়োজনে বিআইডাব্লিউটিএ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। লঞ্চের যে কোন যাত্রী কিংবা লঞ্চ কর্তৃপক্ষ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে পারবেন। এছাড়াও আমাদের ঢাকায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। ঘূর্ণি ঝড়ের মাত্রা বেড়ে গেলে চাঁদপুর থেকে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। কন্ট্রোল রোম নম্বর: ০১৭১৮-৮১০০১৪।

চাঁদপুর লঞ্চঘাটের লঞ্চ মালিকপ্রতিনিধি মো. বিপ্লব সরকার বলেন, চাঁদপুরে আবহাওয়া মেঘাচ্ছন্ন ও হালকা বৃষ্টি থাকলেও ঘাট থেকে সকল লঞ্চ নিয়মিত সময় অনুযায়ী ছেড়ে যাচ্ছে। বিআইডাব্লিউটিএর কোন নির্দেশনা আসলে তখন তা মানা হবে।