বর্তমান তরুণ প্রজন্মের গন্তব্য কোথায়: গেমিং ফ্যাক্ট

চাঁদপুর দিগন্ত ডেস্ক

বৈশ্বিক মহামারীর কারণে ২০২০ সালের ১৫ ই মার্চ থেকে স্কুল কলেজ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখা হয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রমকে চালিয়ে যাওয়ার জন্য পরবর্তীতে অনলাইন এডুকেশন সিস্টেম চালু করা হয়। যার ফলে কোমলমতি শিশু-কিশোর তরুণ এবং যুবকদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারের প্রচলন হয় ব্যাপক হারে। কিন্তু আজকে আমরা যদি একটা জিনিস লক্ষ্য করি অনলাইন ক্লাসের নাম করে তরুণ প্রজন্ম আজ হারিয়ে যাচ্ছে আধুনিকতার নামে নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে।

বিশেষ করে তারা ঝুঁকে পড়ছে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে এই জেনারেশন ধ্বংসকারী গেম ফ্রী ফায়ার এবং পাবজি যার ফলাফল আগামী প্রজন্মকে দিতে বাধ্য করবে। আমরা কল্পনাও করতে পারতেছিনা এর ভয়াবহতা কোথায় গিয়ে থামবে। গেমিংয়ের এই অসুস্থতা শহর ছাড়িয়ে পারাগায় বিস্তার লাভ করেছে। এই প্রজন্ম এখন পড়াশোনা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে। করতে বললে তাদের পড়া ভাল লাগেনা কিন্তু গেম ভালো লাগে এর একটা কারণ আছে মানুষের মস্তিষ্ক থেকে ডোপামিন নামে এক ধরনের হরমোন সেক্রেশন হয় যা কোন কিছু ভালোলাগা সৃষ্টি করে।

একজন স্টুডেন্ট যখন ঘুম থেকে উঠে তার মোবাইল স্ক্রিনে চোখ বুলায় গেমিং এ বুঁদ হয়ে থাকে তখন তার ডোপামিন সেক্রেশন টা হয়ে থাকে কিন্তু যখন সে পড়াশোনা টেবিলে যায় তখন আর তার পড়া ভাল লাগেনা ১০ ২০ মিনিট পড়তেই তার অস্থিরতা শুরু হয়ে যায় এর কারণ হচ্ছে তার যে ডোপামিন সেক্রেশন হয়েছিল তার গেমের পতিতাকে আসক্তি করে তুলেছিল পরবর্তীতে যা আর পড়ার সময় সেক্রেশন হয়নি। আমরা যদি আমাদের সন্তানদেরকে এভাবেই চলতে দেই তাহলে এই প্রজন্ম আমাদের সমাজের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। কারণ এই দুইটা গেম খেলতে এমবির প্রয়োজন হয়।

এমবি কিনতে টাকা লাগে। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা অনেকগুলো ঘটনার সাক্ষ্য হয়েছি

যেমন একজন কৃষক তার বাবা-মার কাছ থেকে এমবি কেনার জন্য টাকা চেয়েছিল মোবাইলে গেম খেলবে কিন্তু গরিব মা তার সন্তানকে টাকা দিতে পারেন নাই এর ফলে সে অভিমানে আত্মহত্যা করে। আর এই গেমিং এর নামে আমাদের সমাজে সৃষ্টি হয়েছে কিশোর গ্যাং। এইভাবে যদি চলতেই থাকে ভবিষ্যতে আমাদের শুধু ভাবতেই হবে।

এখন বাবা মা তার সন্তানের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে কিছু বললেই বাবা মার উপর দেশে কথা বলে রেগে যায় আত্মহত্যা করার হুমকি দেয় বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় না খেয়ে ঘুমায় বাড়ি থেকে এমন কি বের হয়ে যায় বন্ধুর বাসায় বাকওয়াতের বাসায় অবস্থান করে। আমরা মনে করি বিড়ি-সিগারেট মদ-গাঁজা এগুলো হতো বা আসক্তি এগুলোকে আমরা নেশা করি কিন্তু আসলে কি তাই। আসক্তি বলতে বুঝায় এমন একটা জিনিস আমি যদি সময়মতো জিনিসটাকে না পাই আমার মধ্যে একটা অস্থিরতা তৈরি করে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে তিনি মূলত আসক্তি বলে। সেটা হতে পারে কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য এমনকি ডিজিটাল আসক্তি।

এই প্রজন্ম এইভাবে চলতে থাকলে বাবা-মা একদিন তার সন্তানকে নিয়ে একজন মনোবিজ্ঞানীর কাছে নিয়ে যেতে বাধ্য হবে যে আমার সন্তানরা কেন এমন হচ্ছে আমি পাচ্ছিনা তাকে কন্ট্রোল করতে। আমার এই কথাটা হয়তোবা সত্যে পরিণত হবে আগামী ১০ বছর কিংবা ২০ বছর পরে। তখন প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে একজন করে সাইক্রেটিক নিয়োগ দিতে বাধ্য হবে।

তাই আসুন আমরা যারা অভিভাবক আছি সমাজের সুনাগরিক হিসেবে মনে করি তাদের উচিত এই সকল গেম নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে জোরালো প্রতিবাদ করা দরকার। সূত্র: শিক্ষা সংবাদ