দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধের কথা  

মুহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম   
২৫ শে মার্চ। কালো  রাত।১৯৭১।ঘুমন্ত বাঙ্গালীদের  উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল  পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।মারা যাচ্ছে মানুষ। ছুটছে মানুষ। চোখে মুখে ঘোর অন্ধকার। রাজ্যের চিন্তা।২৫শ মার্চ ২০২০।লকডাউন হয়ে যাবে।রবি  চট্টগ্রামের এক ছাত্রাবাসে থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।
বাসায় একা সে।দেশে উৎকন্ঠা শুরু হয়ে গেছে। আক্রান্ত হচ্ছে  মানুষ। ভয়ে ছুটছে  সবাই। রবির মনে আজ অনেক ভয়।কিন্তু তার ভয় আক্রান্ত হবে এটা নয় বরং সে একা একা কিভাবে থাকবে  খাবে তা নিয়ে । রাতে ট্রেনের টিকেট  করলো পরদিনের। ব্যাগ গুছিয়ে সময়ের জন্য  অপেক্ষা। অপেক্ষার প্রহর শেষ  খবর এলো ট্রেন চলাচল বন্ধ। রবির মাথায়  আকাশ ভেঙে পড়লো। বাস স্টেশনে গিয়ে দেখলো যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। ঝাঁপিয়ে পড়লো রবি। কোন রকম জীবন বাচিয়ে চলে আসলো ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে।
চাঁদপুরে আসার পর রবি অবাক, ” ও মা,এই এলাকার বাসিন্দারা যুদ্ধে যাবে দূরের কথা তাদের আত্মরক্ষার অস্ত্রই নেই।” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেলো আলমগীর কবির নামে এক ভদ্রলোক অস্ত্র বিলাচ্ছেন। এতোদিনে দেশ লকডাউনে।ভদ্রলোকের সাথে রবির পরিচয়  হয়েছে বেশি দিন হয়নি। গ্রামের খেটে-খাওয়া দিন মজুর কৃষকের আত্মরক্ষার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করলো কবির সাহেবের সাথে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অস্ত্র পাঠানোর জন্য। কবির সাহেব সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে কুরিয়ার যোগে অস্ত্র পাঠালেন। চারদিকে পুলিশ সেনাবাহিনীর কঠোর পাহাড়া। অস্ত্র আসলো চাঁদপুর সদরে। পুলিশ সেনাবাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে  আনতে হবে অস্ত্র। শহরে থাকে ফারুকের ডিপার্টমেন্টের ছোট ভাই সাইফুল। সে রাতে গিয়ে তা কুরিয়ার থেকে  গ্রহণ করলো। সে একাধিক বার চেষ্টা করে ব্যার্থ হলো অস্ত্র রবির কাছে পৌঁছাতে। অবশেষে রবির স্কুল কলেজের বন্ধু নকিবের সহায়তায় অস্ত্র এসে পৌছালো রবির হাতে।এতোদিন আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাঁড়িয়েছে । মানুষ মরতে শুরু করেছে।চারদিক থমথমে অবস্থা। একদিন সকালে গ্রামের খেটে-খাওয়া মানুষ,দিন মজুর এবং কৃষকদের মাঝে আত্মরক্ষার অস্ত্র হস্তান্তর করেন এবং  বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে সে।অস্ত্র পেয়ে মানুষের মাঝে আত্নবিশ্বাস জাগ্রত হয়।
যতদিন যাচ্ছে লাশের মিছিল ততোবড় হচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে জ্যামিতিক হারে। মানুষের কাজকর্ম বন্ধ। তাই  আয় রোজগার নেই । দিনমজুরদের জমানো অল্প কিছু যা ছিল এতো দিনে তা শেষ। না খেয়ে অনাহারে দিন কাটতে শুরু হলো তারাাাদধঅঅঅদঅ। সরকার দেওয়া ত্রাণ তাদের হাত পর্যন্ত পৌছায় না তার আগেই রাঘব বোয়ালরা খেয়ে নেয়। যেই কয়েকজন পায় তা অপ্রতুল। খবরের কাগজ দেখা গেল খবর ছাপা হল  তেলের খনি পাওয়া গেছে। পরে শুনি কোন ব্যাক্তির বিছানার নিচ থেকে উদ্ধার হয় এই খনির।যাই খোক চারদিকে  ত্রাণ চোর ধরা খেতে থাকলো।এই অবস্থা দেখে রবি কবির ভাই কে বলল,” ভাই, মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে, এদের জন্য কিছু  একটা করেন “। পরদিন থেকে রাতের অন্ধকারে বৃষ্টিতে ভিজে দিনমজুরি- কৃষকের ঘরে ঘরে  খাবার পৌছাতে শুরু করলো রবি। বাজারে যাওয়া যায় না, ঘরে থেকে বের হওয়া যায় না । যে কোন সময় পুলিশ সেনাবাহিনী আসতে  পারে। পুরো পৃথিবী থমকে গেছে। দেশ গুলোর অর্থনীতি ভেঙে গেছে। বড় বড় দেশ গুলো চীন কে দোষারোপ  করছে – তারা ইচ্ছা  করে  যুদ্ধ শুরু করেছে।ট্রাম্প বেইজিং কে হুমকি দিচ্ছে দেখে  নেওয়ার। গবেষকগণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্ক  করেছে। বিশ্বে মৃতের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে অনেক আগে।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ  অনেক দিন হল।মীম -মাহিম রবির ভাই বোন। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধে যখন আসতো সে তেমন সময় দিতে  পারতো না সে।এখন রাজ্যের সময় তার।কোন বন্ধু বান্ধব নাই পাশে। তাই হয়তো অনেকটা বাধ্য হয়ে মীম মাহিমকে বন্ধু বানিয়ে তাদের সাথে খুনসুটিতে মেতে ওঠে সে। যুদ্ধের পূর্বে  মানুষের বাচ্চাদের পড়িয়ে  যা পেতে তা দিয়ে চলতো। আজ সে নিজের ঘরে বিনামূল্যে  তার  ভাই বোন কে পড়াচ্ছে।যা তাকে একটু বেশি তৃপ্তি  দিচ্ছে। তার মা একা একা সংসারে সকল কাজ করে তা দেখে ফারুক চিন্তা হলো মা কে সাহায্যে  করা উচিত। তার বাবা কৃষক  হওয়ায় যুদ্ধের মধ্যেও কাজ  বন্ধ  করতে  পারে নাই।সে বাবাকে  নিষেধ করলো এই অবস্থায় মাঠে  যেতে।প্রতিত্তোরে তার বাবা বলেন, ” বাবা, এই অবস্থায় যদি আমি মাঠে না যাই তাহলে মানুষ  না খেয়ে মারা যাবে “।বাবার কথা শুনে তার উপলব্ধি হলো, আসলেই তো।পরদিন থেকে সে নিজেও মাঠে গিয়ে বাবাকে সাহায্য  করা শুরু করলো। যদিও সে তেমন কাজ পারে নাই। পারবেই বা কেমন করে  সে যে একেবারে নতুন। খবর আসলো সিলেটের একজন চিকিৎসক যোদ্ধা মারা গেছে।
টিকটিক করে ঘড়ির কাটা ঘুরছে। সময় ২ঃ২৯ মিনিট। একমিনিট বাকি। আজ হয়তো ফ্লোরা তার ৫১ নং শাড়ি পড়ে আক্রান্ত,মৃত এবং সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বলবেন। প্রতি দিনের মত কোটি কোটি মানুষ আজও মুখিয়ে আছে এটা শোনার জন্য, “বাংলাদেশ আজ  শত্রুমুক্ত,আমরা বিজয়ী “।  না ফ্লোরা তা বললেন না।বরং তিনি যা বললেন  তা শুনে মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে যায়।
দেশে আধুনিক অস্ত্রের  যে অভাব তা স্পষ্ট। তারমধ্যে খবর এলো  জাফরউল্লাহ নামক  এক মুক্তিযোদ্ধার  প্রতিষ্ঠান গনস্থাস্থ্যকেন্দ্র – যারা কম খরচে  অধিক হারে  অস্ত্র বানাতে পারবে।কিন্তু সরকার অনুমতি না দেওয়া জনমানুষের মাঝে অসন্তোষ দেখা  যায়।
পৃথিবী লকডাউন অনেক দিন হলো। যখন থমকে গেছে পৃথিবী , তখন ভালো কিছু খবর আসা শুরু হলো।কার্বন নির্গমনের পরিমাণ কমে গেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।কক্সবাজারে ডলফিনের নৃত্য দেখা শুরু করেছে স্থানীয়রা।কুয়াকাটায় লাল কাঁকড়ার দল  অংশগ্রহণ করেছে যেমন খুশি তেমন সাজোতে।নানান বংশের পাখির দল দখল করেছে ঢাকার রাজপথ। প্রকৃতি যেন নতুন রুপে নিজেকে সাজিয়েছে।
মুসলমানদের পবিত্র জায়গা মসজিদ বন্ধ । একটা সময় মসজিদ খোলা ছিল। মুসল্লি ছিল না।আজ মসজিদ বন্ধ কিন্তু মুসল্লীর অভাব  নেই।  আজ তারা কাঁদে মসজিদে না যেতে পেরে। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝি না। মসজিদে দশজন নামাজ  পড়তে পারবে।শুনলাম কোথাও কোথাও  নাকি তা নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়েছে।  এরই মধ্যে খবর এলো বি-বাড়িয়া দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ  ও প্রাণহানি।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলকালাম।
যতদিন যাচ্ছে লাশের মিছিল ততো বড় হচ্ছে। ঐ দিকে দুইদিন পর পবিত্র রমজান মাস। প্রচন্ড গরম। এতোদিন মানুষের ঘরে  খাবার শেষ। আলমগীর কবির ভাইকে সমস্যার কথা বলার আগে কবির  ভাই ফারুকে ফোন   দিয়ে  সমস্যার  কথা জানতে  চাইলো।রবি  বিস্তারিত বলল কবির ভাইকে।কবির  ভাই দীর্ঘ দিন  যাবত খেটে খাওয়া দিন মজুর কৃষকদের জন্য  কাজ করে তার স্বপ্নের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীনভয়েসের মাধ্যমে। রবি গ্রীন ভয়েস এর সহায়তায় বাজার  করে নিয়ে আসলেন। ব্যাগ ধরে ইফতার সামগ্রী নিয়ে  প্রস্তুত সে।রাত হলেই  সে চলে যাবে মানুষের ঘরে ঘরে। কিন্তু না বিকালে প্রচন্ড ঝড়তুফান হলো। ঝড়তুফান যখন থামলো  তখন ঘড়িতে সময় ১০ঃ৩০ মিনিটের বেশি।তারপর সে ছুটে চললো মানুষের ঘরে ঘরে সবার চক্ষু আড়ালে। সে যখন ঘরে আসে কখন ঘড়িতে  আনুমানিক ১ঃ২০ বাজে।একা একা গ্রামের অন্ধকার পথ ধরে দুই হাতে  দুই ব্যাগ নিয়ে ছুটে চলছে সে।কিছুক্ষন যাওয়ার পর হাঁপিয়ে ওঠে। একটু জিরিয়ে নেয় সে।প্রায় ত্রিশ কেজি ওজনের ব্যাগ নিয়ে ২ কি.মি দূরের এক দোচালা ঘর তার গন্তব্য।
রমজান  শুরু হয়েছে। প্রচন্ড গরম পড়ছে। রোজা রাখতে মানুষের অনেক কষ্ট  হচ্ছে। তারপরেও মানুষ রোজা রাখছে। আজ মাহিম ও রোজা।এই প্রচন্ড রৌদ্রতেজ  কৃষক হুমরি খেয়ে যাচ্ছে কাজ করতে। কি করবে? নিজের জীবন ঝুঁকি নিয়ে  যে তাদের কাজ করে যেতে  হবে। কারণ তাদের উৎপাদিত ফসলের দিকে তাকিয়ে আছে সারাদেশে কোটি কোটি ক্ষুদার্ত চক্ষু। ফারুক  মাঠে বাবার সাথে  কাজ করছে।যদিও সে এই পেশায় নতুন। তার বাবা তাকে কাজ শিখিয়ে দিচ্ছে। তার পরেও সময়ের  একফোড় অসময়ে দশ।আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে  সাথে মানুষের মাঝে  আতঙ্ক কমে যাচ্ছে। এখন আগের মত  আড়াইটার সময় ফ্লোরার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে না।এলাকায় যাদের টিভি বা মোবাইল  নাই তারা আগের মত রবিকে জিগ্যেস  করে  না, “রবি, আজকের কি খবর?” মাঝে মাঝে  খবর আসে পাশের এলাকায় একজন মারা গেছে। পাশের গ্রামে আক্রান্ত। পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গেছে। মাঝে মাঝে শুনা যায় পুলিশ আসার আগে পালিয়ে গেছে। একদিন রাতে তখন ১২ টা হবে।রবি তখন ঘরে। শুয়ে মোবাইলে বই পড়ছে। হঠাৎ মসজিদের মাইকে ঘোষণা আসলো, ” আপনারা সবাই উঠুন,ঘরে ঘরে আজান দিন,দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করুন” মসজিদে আযান হলো।রবি শোয়া থেকে উঠলো। ওজু করলো, আযান দিলো।নামাজ পড়লো।মা-বাবা কে ডাকলো নামাজের জন্য। এতোক্ষনে বাড়ির সবাই  উঠে পড়লো।মোবাইলে খবর চলে আসলো, কোথায় নাকি একটা বাচ্চা হয়েছে, বাচ্চা জন্মানোর  সাথে সাথে কথা বললো, সবাইকে  রং চা খেতে বললো,তারপর সে মারা গেলো।অল্প সময়ে এই সংবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লো। রং চা খেলে যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে। যুদ্ধ বন্ধের এমন হাজারো অকৌশল দেখেছে দেশের মানুষ। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ  হয় নাই বরং আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিলো সমানতালে।
চীন থেকে ইটালি, ইটালি  থেকে যুক্তরাষ্ট্র আক্রান্তে শীর্ষে।বিশ্ব অর্থনীতি আজ  ভেঙে পড়েছে। গ্লোবালাইজেশন  শব্দটা জনপ্রিয়তা হারিয়ে বসে আছে।  স্কুল কলেজ বন্ধ অনেক দিন  হলো। চাকরি প্রত্যাশিরা চিন্তিত তাদের বয়স নিয়ে। এইচএসসি শিক্ষার্থীরা চিন্তিত পরীক্ষার জন্য। এসএসসির ফলাফল এখনো প্রকাশিত হয়নি।রবির স্নাতক ফাইনাল সেমিস্টারে পরীক্ষা বাকী। সে চিন্তিত তার পরীক্ষা নিয়ে।
গত দুইদিন বেসম্ভব গরম।খবর এলো  সমুদ্র বন্দর কে ৪ নং সংকেত দেখতে  বলা হয়েছে। একদিন পর এই সংকেত ১০ নং এ চলে  গেলো।মেঘনার পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কায় বাপ বেটা মাঠে  গিয়ে ফসল নিয়ে আসতে গেলো।আজ নীল আকাশ নেই। আকাশে মেঘ দৌড়াদৌড়ি  করছে। ঠান্ডা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। আজকের বাতাস রবিকে  প্রশান্তি দিচ্ছে। আল্লাহর রহমতে ঘূর্ণিঝড় “আম্পান” বাংলাদেশের উপর দিয়ে না এসে ভারতের উপর দিয়ে চলে যায়।বাংলাদেশের উপর দিয়ে যেই অংশ টুকু আসে সুন্দরবনের উপর দিয়ে যায়। এই যাত্রা সুন্দরবনের মাধ্যমে আল্লাহ  আমাদের রক্ষা করে।কিছু দিন পূর্বে এই সুন্দরবন  ধ্বংসের কি চক্রান্ত ই  না হয়েছিল। সেসময় গ্রীন ভয়েস সহ পরিবেশবাদি সংগঠনগুলো সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন করেছিলো। আজ পত্রিকাগুলো তাদের কথাগুলো পুনরাবৃত্তি করলো।সাতক্ষীরায়  বেঁড়ি ভেঙে  লোকালয়ে  পানি প্রবেশ করেছে। দেখলাম বন্যা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খাবার  নিয়ে গেলো আলমগীর কবির ভাই এর গ্রীন ভয়েস।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ অনেকটা কাছে চলে এসেছে। বিগত বছরগুলোর মতো এবার শপিং করার ধুম নাই। পুলিশ সেনাবাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কেউ কেউ পরিবারের ছোটদের জন্য কেনাকাটা  করছে।পাশের ঘরের সামিয়ার মা মেয়ের জন্য  ঈদের কেনাকাটা করার জন্য সেহেরি খেয়ে বাজারে চলে যায়। সকাল সকাল  পুলিশ সেনাবাহিনী টহল দেয় না।তাই এই সময়কে বেছে  নিয়েছেন তারা।যাই হোক সামিয়ার নতুন জামা দেখে মীম বায়না ধরেছে  নতুন জামা কিনে দেওয়ার জন্য। কিন্তু রবির মাথায়  ঘুরছে   মানুষ জনের ঘরের খাবার শেষ হয়ে গেছে। তাদের কি করে আবার  খাবার পৌছানো যায়। তার উপর  ঈদ।যদি একটু সেমাই না খেতে পারে তাহলে কি ঈদ হয়? পরদিন আলমগীর কবির ভাইকে ফোন করলো রবি। গ্রীন ভয়েস এর আর্থিক সহায়তায় ঈদ উপহার সামগ্রী পৌছানো শুরু করলো রবি। বাড়িতে আসলে তার আদরের ছোট বোনের আবদার রক্ষা  করতে না পারায় তাকে কষ্ট দিতো।কিন্তু রাতের অন্ধকারে ঈদ উপহার নিয়ে যখন মানুষের ঘরে ঘরে যেতো সে তখন সকল কষ্ট দূর হয়ে যেতো তার।উপহার পেয়ে যে হাসি দিতো ইতিপূর্বে সে  কখনো তা প্রত্যেক্ষ করে নাই।  যুদ্ধের মধ্যে অন্য রকম ঈদ কাটিয়েছে পৃথিবী।( চলবে)
         (  মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ
           চট্টগ্রাম  বিশ্ববিদ্যালয়  )