চাঁদপুর পৌর নির্বাচনে ২ মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন, নিহত ১

ইলিয়াছ পাটওয়ারী

চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচনে ১জনের মৃত্যু! নির্বাচন বয়কট করেছেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আক্তার হোসেন মাঝি এবং চরমোনাই পীর মনোনীত মনোনীত মেয়র প্রার্থী মামুনুর রশিদ বেলাল। পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

শনিবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় গনি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাহিরে প্রার্থীর সমর্থকদের আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই গ্রুæপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ ঘটে এতে করে মো. ইয়াছিন মোল্লা (১৮) নামে এক কিশোর গুরুতর আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় ইয়াছিনকে তার বন্ধু রিয়াদ চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক নুরে আলম প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার করেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে পরবর্তীতে ঢাকায় নেয়ার পথে দুপুর ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী আক্তার হোসেন মাঝি সকাল ১১টায় ভোট বর্জন করেছেন। আজ দুপুর ২ টায় চাঁদপুর বিপনিবাগ নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই ভোট বর্জন করেন। তিনি বলেন, এই প্রহসনের নির্বাচন আমরা মানিনা সকালে কিছু সময় শান্তিপূর্ণ ভোট পড়লেও

সকাল ১০টার পর থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর লোকজন আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এতে করে আমাদের কয়েকজন নিরীহ কর্মী গুরুতর আহত হয়। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করছে কিন্তু ভোটারদের টিপসই নিয়ে তারা নিজেরা দাঁড়িয়ে থেকে নৌকার প্রতীকে ভোট দিচ্ছে। আমরা এই প্রহসনের নির্বাচন বয়কট করলাম। এই সরকারের আমলে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কখনোই আশা করা যায় না।

সকালে গণিত স্কুল কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই গ্রুæপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ ঘটে

এতে করে ইয়াসিন (১৭) নামে এক কিশোর গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে ঢাকা নেয়ার পথে চাঁদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মারা যায় বলে জানা যায়। তবে সে কোন দলের কর্মী তা এখনো জানা যায়নি।

বিকেল সাড়ে ৩টায় দলীয় কার্যালয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মামুনুর রশিদ বেলাল।

নিহত ইয়াছিন শহরের কোড়ালিয়া রোডের মো. হারুন মোল্লার ছেলে। হারুন মোল্লা গ্রামীন ফোন সেন্টারের দারোয়ান। তার ৩ ছেলের মধ্যে ইয়াছিন বড় এবং সে দর্জি কাজ করতো।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, ওই যুবকের অবস্থা গুরুতর ছিলো। ছুরিকাঘাতে তার গলার রগ কেটে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই ঢাকার নেয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে।

ইয়াছিনের পিতা হারুন মোল্লা জানান, তার ছেলে নির্বাচনী কেন্দ্রের সামনে আসেন তখনই সহিংসতার মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হন। তাকে ছুরিকাঘাত করেন কোড়ালিয়া এলাকার মফিজ মিজির ছেলে মো. শাহাদাত মিজি (২০)।

ইয়াছিনের মা আমেনা বেগম জানান, তার ছেলে দর্জি কাজ করতো। নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্যই মূলত সেখানে গিয়েছেন। কিন্তু সহপাঠীরাই তার ছেলেকে কুপিয়ে মেরেছে।

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসিম উদ্দিন জানান, আমরা জানতে পেরেছি নিহত ইয়াছিন ও অভিযুক্ত শাহাদাত উভয়ই বøাকবোর্ড মার্কার সমর্থক। তাদের মধ্যে সিনিয়র ও জুনিয়র নিয়ে তর্কের এক পর্যায় এই ঘটনায় ঘটে। তবে আমাদের কাছে অভিযোগ করা হলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তার মরদেহ এখন থানায় রয়েছে।

এছাড়া বেশ কয়টি ভোট কেন্দ্রে বিএনপি নেতা কর্মীদের মারধর ও কুপিয়ে জখম করে। গুরুতর কয়েকজনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এমতাবস্থায় বিএনপি নেতাকর্মী এবং পৌরবাসীর জানমাল রক্ষায় আমি নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিএনপি ও আ’লীগের নেতাকর্মীরা দাবী করছেন নিহত ইয়াছিন তাদের কর্মী।