চাঁদপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিষপানে মৃত্যু

কে এম সালাউদ্দিন

চাঁদপুর শহরের তালতলা বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম (৫৫) দুর্বৃত্তদের খাওয়ানো বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

রফিকুল ইসলামের বাড়ী জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গল্লাক শ্রীকালিয়া গ্রামে। তিনি স্বপরিবারে শহরের নাজির পাড়া পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভুঁইয়ার বাড়ীতে ভাড়া থাকতেন। তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক এবং বড় মেয়ে বিশ^বিদ্যালয়ে পড়েন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক নারগিস বেগম স্বপ্না বলেন, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

এরপর করোনার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এ বছর তিনি বিদ্যালয় ভর্তিসহ যাবতীয় শিক্ষক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। শিক্ষকদের সাথে তিনি কম কথা বলতেন। একটু শান্ত প্রকৃতির ছিলেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য মির্জা জাকির বলেন, প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু অনেকটা রহস্যজনক।

কারণ কেউ বলছেন আত্মহত্যা।

আবার কেউ বলছেন তাকে বিষক্রিয়া খাওয়ানো হয়েছে। ঘটনাটি এখনো পরিস্কার নয়। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা বলেন, সকালে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বিদ্যালয়ে আসেন এবং তার কক্ষে দাপ্তরিক কাজ করেন।

বিদ্যালয়ে এসে তিনি তার কাজের সহযোগিতায় অন্য শিক্ষকদের আসার জন্য ডাকেন। কাজ শেষে সবাই চলেগেলেও রফিকুল ইসলামের পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিদ্যালয়ে বৈঠক হবে বলে থেকে যান। বহিরাগত লোকজনও বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছেন। বিকাল ৩টার দিকে বাসায় না যাওয়ায় তার স্ত্রী মিলি বেগম বিদ্যালয়ে আসেন

এবং বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলায় অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি ফোন করে নিকটতম লোকদেরকে জানান। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন সুমনসহ অন্যান্যরা অচেতন অবস্থায় সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখনও রফিকুল ইসলামের কিছুটা নড়াছড়া ছিল।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দিন বলেন, মৃত্যু সংবাদ জানতে পেরে বিদ্যালয়ে এসেছি। এসে জানতে পেরেছি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরে তাকে সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে তার মৃত্যু হয়। আমরা ঘটনাস্থল থেকে একটি আত্মহত্যার নোট ও বিষের বোতল উদ্ধার করেছি। এগুলো আমাদের তদন্ত ও পর্যালোচনার বিষয় রয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। মরদেহ সুরতহাল করা হয়েছে। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।