করোনার লকডাউন ও এবারের ঈদ

এসএম আনওয়ারুল করীম

করোনা লকডাউনেই এলো এবারের ঈদ। ঈদ মানে আনন্দ। খুশি। উৎসব। বিনোদন। মাসব্যাপি নির্জলা রোজাব্রত পালনশেষে ঘরে ঘরে হাজির হয় এ খুশি। কিন্তু এবারের ঈদুল ফিতর সম্পূর্ণ ভিন্নতর। এবারের ঈদের বাঁকা চাঁদের হাসি সবার জন্য আনন্দের নয়। খুশির পরিবর্তে কারও কারও জন্য বয়ে আনছে বেদনার ডালি।

কারণ কোভিড-১৯ তথা করোনা এক ভয়ানক বৈশি^ক মহামারি। এ মহামারি ভাইরাসের প্রবল দাপট চলছে দীর্ঘদিন। বিশ^ব্যাপি চলছে আতঙ্ক। চলছে ভয়। বইছে শঙ্কার সুপার সাইক্লোন। বিষাদের ঝড়োহাওয়া। তাই এবারের ঈদুল ফিতরের গায়ে লেপ্টে আছে মহামারি করোনার ভয়ালতা। করোনা আতঙ্কে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে হাতে হাত মিলানো হবে না এবার। হবে না কোলাকুলি গলাগলি। হবে না দলে দলে ফিরনি পায়েশ সেমাই ভাগাভাগি করা।

মুসলিম বিশে^ যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেনতেনভাবে নামাজের জামাত চলছে, পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণ যেখানে ফাঁকা রাখা হয়েছে, মসজিদে নববিতে যেখানে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে প্রবেশাধিকার থাকছে; সেখানে এবারের ঈদ সত্যিকারের আনন্দ কতটা বয়ে আনবে তা সকলেরই বোধগম্য। ইতোমধ্যে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে ধর্মমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে খোলা ময়দানে ঈদের জামাত না করার জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরে, পরিচ্ছন্নতা বিধি মেনে, প্রয়োজনে হাতে গ্লাবস পরে, স্যানিটাইজার মেখে কিংবা সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে, জায়নামাজ নিয়ে, দুজনের মাঝে পর্যাপ্ত ফাঁক রেখে মসজিদে হবে এবারের ঈদের নামাজ। তাই অনেকের মনেই হয়তো জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের মনকাড়া ঈদসংগীত ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শুন আসমানি তাগিদ’ আগের মতো দোলা দেবে না। আর এ কারণে এবার বছর ঘুরে আনন্দের সওগাত নিয়ে আসা পবিত্র ঈদুল ফিতরও হয়তো ততটা খুশিময় হবে না।

গোটা বিশ^ এখন করোনার ভয়াল থাবায় কুপোকাৎ। গত ২২ মার্চ আমাদের দেশে সরকারিভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কার্যত মসজিদ বন্ধ ঘোষণা করা না হলেও পাঞ্জেগানা মসজিদে পাঁচজন আর জুমার জামাতে বারোজন উপস্থিত হতে পারার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় ৬ এপ্রিল। গত ৭ মে এ বিধিনিষেধ শিথিল করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি ঈদের জামাত খোলা ময়দানে পড়তে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আর এই নিষেধাজ্ঞার মাঝেই মুসলিম মিল্লাতের দ্বারে সমুপস্থিত ঈদুল ফিতর। সঙ্গত কারণেই এবার ঈদ আনন্দ অনেকটা পানসা হবে বলেই ধরে নেওয়া যায়। তবে হ্যাঁ, মুসলমানদের হাজার বছরের ঐতিহ্য কোনোমতেই ম্লান হতে দেওয়া যাবে না; বরং করোনায় আক্রান্তদের সেবায় তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের খোঁজখবর নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়াই হবে মুসলিম মিল্লাতের এবারের ঈদের প্রকৃত উৎসব। কবির ভাষায় নিজের খাবার বিলিয়ে দেব অনাহারির মুখে এবারের ঈদে পালন করতে হবে করোনা সতর্কতার মধ্য দিয়ে।

মানবজীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রেই তারা বিভিন্ন আনন্দের আতিশয্যে উদ্বেলিত হয়। এ সকল আনন্দময় মুহূর্তকেই ঈদ বলে আখ্যায়িত করা যেতে পারে। তবে সমগ্র বিশ্ববাসী ঈদ বলতে মুসলিম উম্মাহর দুটি বিশেষ উৎসবকেই বুঝে থাকেন। অন্যভাবে একে মুসলমানদের জাতীয় উৎসব বলা হয়ে থাকে। ইসলামি সংস্কৃতির মূর্তপ্রতীক ঈদ আনন্দের বারতা নিয়ে প্রতি বছর আমাদের হৃদয়ের দরোজায় করাঘাত করতে হাজির হয়। এবার বৈশি^ক মহামারি করোনার কারণে ঈদ খুশির বারতা নিয়ে হাজির হতে পারছে না। তাই বলে ঈদের প্রকৃত শিক্ষা আমাদেরকে কোনোভাবেই ভুলে গেলে চলবে না। কারণ ঈদুল ফিতর একাধারে দীর্ঘ একমাসের একনিষ্ঠ সিয়াম সাধনা ও কৃচ্ছতা সাধনের পর তা অবসানের আনন্দোৎসব। আর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই কৃচ্ছতাসাধন একান্ত জরুরি। এ শিক্ষা শুধু রমজান মাসেই সীমাবদ্ধ নয়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যদি কৃচ্ছতাসাধনের শিক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হতো তাহলে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বৈষম্যের শক্ত প্রাচীর দাঁড়াত না। করোনা এসে আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে দিয়েছে। কেউ বিশতলায় আর কেউ গাছতলায় এ বৈষম্য ভুলতে শিখিয়েছে ঈদের কাঁধে কাঁধ মিলানো মধুর স্মৃতি।
বিশ্বের প্রতিটি জাতির জীবনেই বছরে এমন দু’-চারটি দিন আসে, যাকে তারা তাদের কোনো না কোনো জাতীয় উৎসবের স্মরণীয় দিন হিসেবে অত্যন্ত প্রিয় মনে করে। সেদিনের আগমন জাতির প্রত্যেকটি মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় আনন্দোৎসবের নতুন ধারা। অন্যান্য জাতির আনন্দোৎসব হচ্ছে এই ক্ষণস্থায়ী জগতের সুখসম্ভোগ অর্জন এবং ইন্দ্রিয়জ কামনা-বাসনা পূরণ। কিন্তু মুসলমানদের কামনা-বাসনা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।

তাদের আকাক্সক্ষা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির অধীন। তাদের সবচে’ বড় উৎসব হচ্ছে আল্লাহতায়ালার আনুগত্যে মাথা নত করা। তাই করোনার লকডাউনে যারা অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতরভাবে দিনাতিপাত করছে নিজের সুখসম্ভোগটার একাংশ যদি তাদের জন্য বিলিয়ে দেওয়া যায় তবে তাই হবে ঈদের প্রকৃত শিক্ষার বাস্তবায়ন।
ঈদ সামাজিক উৎসব হিসেবে প্রতি বছর বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মতো বাংলাদেশেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বিশেষ করে বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে ঈদ উৎসবকে ঘিরে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় অনির্বচনীয় এক প্রাণচাঞ্চল্য। আমাদের ঈদ উৎসবে যান্ত্রিকতার প্রলেপ লাগলেও ঈদ উৎসবের একটা ব্যাপকতা রয়েছে।

গ্রামেগঞ্জে ঈদের আগের দিন অর্থাৎ যেদিন আকাশে চাঁদ দেখা যাবে, সেদিন গ্রামের মানুষ স্থানীয় মসজিদে একত্রিত হয়। গ্রামের সম্ভ্রান্ত লোকেরা আসেন এবং সাধারণ মানুষও এসে জড়ো হয়। সন্ধ্যার আগ থেকেই লোকজন জড়ো হয়ে পশ্চিম আকাশের দিগবলয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। পর্যবেক্ষণ করে যখন চাঁদ দেখা যায়, তখন সেই চাঁদকে নিয়ে উৎসাহের অন্ত থাকে না। সব মানুষ ঐ চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকে। কেউবা দু’হাত তুলে মোনাজাত করে মুখে হাত বুলিয়ে নেয়। এবার করোনা মহামারি ও লকডাউনের কারণে হয়তো আর চাঁদ দেখার সে রকম আগ্রহ থাকবে না। লকডাউনের প্রভাবে যে যেখানে আছে সেখানেই অবস্থান করতে হচ্ছে। তাই বলে আমাদের ঐতিহ্য আমাদের সংস্কৃতি মলিন হয়ে যাবে না। আমরা যদি একজন দুঃখী মানুষের মুখে কিংবা লকডাউনে বন্দি অনাহারি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারি, এটিই হবে আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ। বড় খুশি।
ঈদুল ফিতর মূলতঃ ফিতরা আদায়কে কেন্দ্র করে। দীর্ঘ এক মাসের সিয়াম সাধনার পর বিত্তবানরা আনন্দোৎসব পালন করবে অথচ দীনহীন মানুষ ক্ষুধাক্লিষ্ট দেহ নিয়ে জ্বলে-পুড়ে মরবে, তা হয় না। এজন্যই ইসলামি শরিয়তের পক্ষ হতে দুঃখী মানুষের মুখেও হাসি ফুটাতে ফিতরা ও জাকাতের বিধান রয়েছে। কেউ খাবে আর কেউ খাবে না, তা হবে না সূত্রেই সাম্যমৈত্রীর ধর্ম ইসলামে বিত্তবানদের জন্যে জাকাত ফিতরা আদায়ের নিয়ম প্রবর্তিত হয়েছে। ঈদুল ফিতরের দিন সুবহি সাদিকের সময় জীবিকা নির্বাহের অত্যাবশকীয় সামগ্রী ছাড়া নিসাব পরিমাণ টাকা বা অন্য কোনো মালের মালিক থাকলেই তার ওপর নিজের ও নিজের নাবালক সন্তানসন্তুতির পক্ষ হতে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব।

এখানে একটি কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, কোনো ব্যক্তির ওপর জাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য তার অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রি ছাড়া নিসাব পরিমাণ টাকা বা অন্য মাল বর্ষ অতিক্রম করা প্রয়োজন। পক্ষান্তরে ফিতরা ওয়াজিব হওয়ার জন্য শুধুমাত্র ঈদুল ফিতরের দিবসের প্রত্যুষে নিসাবের মালিক হলেই ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব হয়ে যায়। একই সাথে ফিতরা ওয়াজিবের জন্য মাল ব্যবসার জন্য হওয়াও শর্ত নয়। যেহেতু এবার আমরা করোনার লকডাউনে আবদ্ধ তাই প্রতিদিন যারা ক্ষুধার জ¦ালে আবদ্ধ থাকে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও বোঝার সুযোগ হয়েছে। তাই জীবনে যাদের হররোজ রোজা ক্ষুধায় আসেনি নিদ/ আধমরা সেই কৃষকের ঘরে এসেছে কি কখনও ঈদ কবির চিরশাশ^ত উচ্চারণটিকে বাস্তবতায় রূপ দিতে এবারের ফিতরার অর্থ খুঁজে খুঁজে লকডাউনে বন্দি দুঃস্থ মানুষের মাঝে বিতরণ করতে পারি। বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ হতে ইতোমধ্যেই এবারের সর্বনি¤œ ফিতরা মাথাপিছু ৭০ টাকার ঘোষণা প্রচারিত হয়েছে।
ঈদুল ফিতর একদিকে যেমন আনন্দের দিন, তেমনি সেটি চিন্তার দিন। ঈদ কেন খুশির দিন, তা’ আগেই আলোচনা করা হয়েছে। পক্ষান্তরে এটি মহাচিন্তার দিন এজন্যে যে, মাহে রমজান ছিল একটি মহাগুরুত্বপূর্ণ মাস। রমজানের পরই আসল ঈদ। ঈদের চাঁদ উঁকি দেওয়া মানেই রমজানের মতো একটি মহাপুণ্যবান মাসের বিদায়। তাইতো হযরত আবু বকর (রা) একদা ঈদের দিনে বসে কাঁদছিলেন। অন্যান্য সাহাবা তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, জনাব! আপনি কাঁদছেন? আজকের খুশির দিনেও ক্রন্দন? জবাবে তিনি বললেন, ঈদ দিবসের তোমাদের উপলব্ধি অনুভূতি ঠিক আছে বটে; কিন্তু আমি এর অর্থ বুঝেছি অন্যভাবে। তাহলো এতদিন আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের পয়গাম সম্বলিত রমজান আমাদের কাছে ছিল। ঈদের আগমনের সাথে সাথে সেই মহিমান্বিত মাসের ইতি ঘটেছে। আবার এক বছর পর এর আগমন ঘটবে। কিন্তু আমার তো জানা নেই, আগামী বছর বাঁচব কিনা। হয়তোবা এটিই আমার জীবনের প্রাপ্ত শেষ রোজার মাস। সে চিন্তায় আমি কাঁদছি।

ঈদ আমাদের জন্যে এক বিরাট নেয়ামত। এ দিন চারদিকে খুশি আর আনন্দের ঢেউ বয়ে যায়। সবার মুখে থাকে হাসি। ফিরনি, সেমাই, পায়েশের ঘ্রাণে বাতাস হয় মুখরিত। সবার মন থাকে প্রফুল্ল। মনে থাকে না হিংসা-বিদ্বেষ। ঈদের দিনে আমরা ঈদগাহে গমন করি, সুন্দর সুন্দর পোশাক পরি। আতর মেখে মাথায় টুপি দিই। আহ! কতো সুন্দর এক বেহেশতি দৃশ্যের অবতারণা। আমাদের সারাদেহ থেকে যেন নূরের রশ্মি ঠিকরে পড়ে। ঈদের জামাতে আমরা আমাদের ইহকাল ও পরকালের মুক্তির জন্যে আল্লাহর দরবারে প্রাণভরে মোনাজাত করি। তামাম বিশ্বের শান্তি কামনা করি। ঈদের জামাতে ধনী-গরিব, মনিব-দাস-এর মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকে না। একমাত্র মুসলিম ছাড়া অন্য কোনো জাতির মাঝে এমন নজির পাওয়া যায় না। আর এজন্যই ঈদ আমাদের জন্যে মহানেয়ামত স্বরূপ। এবারের ঈদ যেহেতু প্রতিবারের চেয়ে ভিন্নতর তাই আসুন এবারের ঈদে আমরা প্রাণ খুলে মহান আল্লাহর দরবারে করোনা মহামারি থেকে বিশ^বাসীকে হেফাজতের জন্য দোয়া করি।

ঈদের দিনে করণীয় : ঈদের দিন আমাদের অনেক কিছু করণীয় রয়েছে। প্রথমত ঈদের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদত-বন্দেগি ছাড়াও ঈদের দিন যে কাজগুলো আমাদের করণীয় তা বিশুদ্ধ হাদিস ও ফিকহের আলোকে তুলে ধরা হলোÑ ১. হজরত ইবনে উমর (রা) দুই ঈদে উত্তম পোশাক পরিধান করতেন। (বায়হাকি) ২. প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্ল¬াহ ইবনে ওমর (রা) ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে রওয়ানা হওয়ার আগে উত্তমরূপে গোসল করতেন। (বায়হাকি) ৩. হজরত আনাস (রা) হতে বর্ণিত রাসূল (সা) ঈদুল ফিতরের দিন খেজুর আহার না করে ঈদগাহের দিকে বের হতেন না (অর্থাৎ ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই কিছু খেতেন)। (বুখারি) ৪.

হজরত ইবনে ওমর (রা) দুই ঈদের দিন প্রত্যুষে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত প্রকাশ্যভাবে তাকবির পাঠ করতেন। (বায়হাকি) ৫. হজরত জাবের (রা) হতে বর্ণিত, হজরত নবি করিম (সা) এক পথ দিয়ে ঈদগাহে যেতেন এবং অন্য পথ দিয়ে প্রত্যাবর্তন করতেন। (বুখারি) ৬. হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা) থেকে বর্ণিত, নবি করিম (সা) ঈদের নামাজের আগে কোনো নামাজ (নফল) আদায় করেননি। ঈদের নামাজ শেষে গৃহে ফিরে দু’রাকাত নামাজ আদায় করতেন। (বুখারি মুসলিম) উপরোল্লি¬খিত হাদিস ও অন্যান্য হাদিসসমূহের ভিত্তিতে ঈদুল ফিতরের দিনে নিম্নোক্ত ১৩টি কাজ পালন করা উত্তম ও সুন্নাতÑ ১. মিসওয়াক করা, ২. খুব প্রত্যুষে শয্যা ত্যাগ করা, ৩. গোসল করা, ৪. যথাসাধ্য উত্তম পোশাক পরিধান করা, ৫. সুগন্ধি ব্যবহার করা, ৬. যথাসাধ্য সুসজ্জিত হওয়া, ৭. ঈদের মাঠে যাওয়ার আগে খুরমা বা মিষ্টান্নদ্রব্য আহার করা, ৮. সময় হওয়া মাত্র ঈদগাহে যাওয়া, ৯. ঈদগাহে যাওয়ার আগে সদকায়ে ফিতর আদায় করা, ১০. যথাসম্ভব মসজিদে ঈদের নামাজ না পড়ে ঈদগাহে আদায় করা, ১১. পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া, ১২. ঈদগাহে এক পথে যাওয়া ও অন্য পথে ফিরে আসা, ১৩. ঈদগাহে যাওয়ার সময় নিচু স্বরে এই তাকবির পাঠ করাÑ আল্ল¬াহু আকবার আল্ল¬াহু আকবার লা-ইলাহা ইল্ল¬াল¬াহু আল্ল¬াহু আকবার ওয়াআল্ল¬াহু আকবার ওয়ালিল্ল¬াহিল হামদ।

লেখক : আলোচক, বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন; মুহাদ্দিস ও প্রাবন্ধিক
ধহধিৎঁষশধৎরস৭৩@মসধরষ.পড়স